জন সারকৌস্কি
অনুবাদ: সিউতি সবুর
জগতে যত না ইট ব্যবহৃত হয়েছে তার চেয়ে ফটোগ্রাফের সমাহার বেশী,এবং সবকটি ফটোগ্রাফই আশ্চর্যজনক ভাবে আলাদা। এমনকি সর্বোচ্চ নিষ্ঠাবান ফটোগ্রাফারের পক্ষেও শ্রেষ্ঠ ফটোগ্রাফারের প্রথমদিককার কাজ হুবহু নকল করা সম্ভব হয় নি।
এটা প্রমানের জন্য পাঠক চেয়ারে বসে কোন নড়াচড়া ছাড়া একটা ফ্যামেলি ইন্সটাম্যাটিক বা লেইকা ক্যামেরাতে পুরো রোল ছবি তুলতে পারেন : এলোমেলোভাবে এদিকে ওদিকে ক্যামেরা তাক করুন,দ্রুত এবং কোনো চিন্তা ভাবনা ছাড়াই। যখন ফিল্ম ডেভেলপ করা হবে, দেখা যাবে প্রতিটা ফ্রেমে ছবি আগেরটা থেকে ভিন্ন হবে। পরিস্থিতি আরো বাজে হবে যখন আপনি ঠাহর করবেন কিছু ছবি খানিকটা হলেও কৌতূহলোদ্দীপক। এমনকি অটোম্যাটিক ক্যামেরা যা ব্যাঙ্কে লোকজনের গতিবিধি রেকর্ড করে তাতেও ওখানকার ঘটনাঘটনের সম্পর্কটা এমন ভাবে ধরা পড়ে যা সাধারণ কোনো প্রতক্ষদর্শীকে অবাক করে।
ফটোগ্রাফারের পক্ষে চেতনাহীন ক্যামেরা যন্ত্রের দক্ষতা বা মৌলিকতার সঙ্গে পাল্লা দেয়া সহজ নয়,কিন্তু ফটোগ্রাফার তাঁর মেধা কাজে লাগাতে পারেন। ফটোগ্রাফিতে কেউ এক মিনিটে নিরানব্বই রকম অসন্তোষজনক ঘটনা-বিন্যাস বাতিল করে শততমটা বেছে নিতে পারেন। বাছাইটা হয় অন্যান্য শিল্পের মতোই প্রথা এবং সহজাত উপলব্ধি নির্ভর, জ্ঞান আর অহং এর সমন্বয়ে। কিন্তু ছবি তোলার যে সহজসাধ্য কাজ এবং ফটোগ্রাফিতে সম্ভাবনার যে প্রাচুর্য্য, তা প্রখর সহজাত তাড়নার অধিকারীর জন্য একটা বাড়তি পাওনা। ফটোগ্রাফারের সমস্যা হয়তো অনেক বেশি জটিল যা যুক্তি দিয়ে সামলানো সম্ভব নয়। একারণেই ফটোগ্রাফাররা মটিফ নিয়ে অনিশ্চয়তা সমেত অস্থিরভাবে ঘুরঘুর করতে থাকে। অন্য কিছুর খোঁজে ব্যস্ত থাকে বলেই সামনে আগ্রহ জাগানোর মতো শক্তিশালী সব রেকর্ড উপেক্ষা করে যায়।
আমেরিকান ফটোগ্রাফার রবার্ট এ্যডামস এই ঘুরঘুর করা তরিকা এবং উদ্দেশ্য নিয়ে লিখেছেন: ‘বারবার ফটোগ্রাফার কয়েক পা হাঁটেন এবং বেশ কৌতুককর ভাবেই ক্যামেরাতে চোখ রাখেন,পরিবার এবং বন্ধুদের বিরক্তি সমেত তিনি অগনিত এ্যঙ্গেলের ছবি জড়ো করতে থাকেন। যদি প্রশ্ন করা হয় তবে ব্যাখ্যা করেন যে তিনি যুতসই একটা কম্পোজিশন বের করতে চেষ্টা করছেন। কিন্তু সেটার সংজ্ঞা দিতে বললে দ্বিধায় পড়ে যান। তিনি যা বলতে চান তা হল ফটোগ্রাফার ফর্ম চান…